নিরাপত্তা

তথ্য নিরাপত্তার বর্তমান ভবিষ্যত

কম্পিউটারে ভাইরাস, ম্যলওয়্যার কিংবা এডওয়্যার নিয়ে অনেক সময়ই আতঙ্কিত থাকি, এই বুঝি সব গেল!! তথ্য নিরাপত্তার বর্তমান ভবিষ্যত নিয়ে যারা চিন্তিত তাদের জন্য হাজির করেছেন স্বল্পবিস্তর তথ্য।

বর্তমানে কম্পিউটার, মোবাইল, ট্যবলেট গ্যাজেটসমূহের প্রচলন বৃদ্ধি পেলেও ডিজিটাল থ্রেট মহাশয়রাও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে।আগে যারা কেবল ভাইরাস নিয়ে চিন্তিত থাকতো তাদের ভাবনা বাড়াতে হাজির এডওয়্যার, স্পাইওয়্যার আরো কত কি!! তার মোকাবেলায় থাকতে হবে অন্য স্ট্র্যাটেজি। এন্টিভাইরাস আপনাকে ভাইরাস থেকে নিরাপত্তা দিলেও কম্পিঊটারের পরিপূর্ণ নিরাপত্তার জন্য সফটওয়্যারের পাশাপাশি থাকা চাই কিছু ইউজার নলেজ। যাই হোক, আজ জানবো একটুখানি জেনারেল ও ব্রডভাবে কিভাবে ডাটা নিরাপদ করা হবে ভবিষ্যতে।

 

বর্তমানঃ

আপনি যদি হোম ইউজার হয়ে থাকেন, তাহলে হয়ত আপনার একটি বা দুটি কম্পিউটার রয়েছে। হয়ত আছে আরো কিছু ফোন বা ট্যবলেট। আমাদের বেশিরভাগ সবাই কিন্তু ওই কম্পিউটারেই যতকিছু আছে তা সেভ করি। ছবি, গান, ভিডিও ইত্যাদি সব সেখানেই সেভ করি। ধরা যাক আপনি তথ্য নিরাপত্তার বর্তমান ভবিষ্যত (2)সাধারন ইউজারের তুলনায় আরো স্মার্ট। আপনি সব ডাটার দুটো করে কপি করে রেখেছেন। মানে এক্সটার্নাল হার্ড ডিস্কে বা অন্য কোন অপ্টিকাল মিডিয়াতে বার্ন করে রেখেছেন। এটা অবশ্যই ভালো করেছেন। ধরা যাক আপনার কম্পিউটারে একটি ম্যলওয়ার ঢুকলো, সেটি ফলস্বরুপ আপনার সব ডাটা করাপ্ট করে ফেলবে। যেহেতু আপনি আগেই আরেকটী ডুপ্লিকেট করে রেখেছেন, এ যাত্রায় বেঁচে যাবেন। কিন্তু ধরুন একজন সাধারন ইউজারের কি হবে এক্ষেত্রে? তার তো হায় হায় করা ছাড়া উপায় নেই? এবারে আসুন, দেখি বড় বড় অফিস বা বিজনেসগুলো কিভাবে তাদের ডাটা সংরক্ষণ করে। অফিস সাধারনত সব কর্মচারীর কম্পিউটার থাকে কিন্তু তারা যেসব ফাইল নিয়ে কাজ করে, সেগুল থাকে অন্য একটি সার্ভার বা নেটওয়ার্কে ফোল্ডারে। কোন কর্মচারীর কম্পিউটারে ম্যলওয়ার ঢুকে গেলেও সেই নেটওয়ার্ক ফোল্ডারে রাখা তথ্যগুলো নিরাপদ নয় কি? ব্যপারটা আসলে ততটা সহজ নয়। এর উত্তর নির্ভর করছে ঠিক কোন ম্যলওয়ার মেশিনটিকে ইনফেক্ট করেছে কারন কিছু কিছু ম্যলওয়ার আছে যেগুলো লোকাল কম্পিউটারের ফাইল ছাড়াও নেটওয়ার্ক ফাইল ও করাপ্ট করতে সক্ষম। এখানে বলাবাহুল্য যে অফিস বা বিজনেস এনভারনমেন্টে যথেষ্ট প্রটেকশন মেকানিজন এপ্লাই করা হয় কিন্তু এরপরেও ম্যলওয়ার ঢুকতে পারে। কাজেই দেখা যাচ্ছে সাধারন হোম ইউজারের তুলনায় সতর্ক থাকার পরেও বিজনেস/অফিস ফাইল ম্যলওয়ার দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে।

ভবিষ্যতঃ

তথ্য নিরাপত্তার বর্তমান ভবিষ্যত (1)এটাকের ধরন পাল্টেছে। এর সাথে পাল্টাতে হবে প্রটেকশন মেকানিজম। আজকাল ভার্চুয়ালাইজেশন নিয়ে অনেক কিছু হচ্ছে। এটাই মুলত ভবিষ্যত। এর অনেক সুবিধে রয়েছে। এই ভার্চুয়ালাইজেশনের একটি অংশ হচ্ছে ভিডিআই (VDI) বা ভার্চুয়াল ডেস্কটপ ইনফ্রাস্ট্রাকচার। এই ভিডিআই আবার কি? এর মাধ্যমে আপনার কাছে থাকবে একটি ডাম্ব থিন ক্লায়েন্ট। থিন ক্লায়েন্ট একটি ছোট কম্পিউটারের মত। এর নিজস্ব তেমন কোন পাওয়ার নেই এবং এটি উইন্ডোজ বা লিনাক্সের অতি অতি সংক্ষিপ্ত ভার্সনে চলে। মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি ফিচার থাকে। এগুলোর মূল কাজ হলো ইউজার কে নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করা। মূলত ইউজার লগিন করার পর তাদের একটি ভার্চুয়াল “সেশন” দেয়া হয়। এই সেশন একটী ফুল ব্লোওন উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম হতে পারে, অথবা হতে পারে ভার্চুয়ালাইজড এপ্লিকেশন। ইউজার যখন লগ-আউট করবে, সেই ভার্চুয়াল সেশন চিরতরে হারিয়ে যাবে। যেহেতু ডাটা ফাইল গুলো থাকে অন্যত্রে, কাজেই এই সেশনের কোন মূল্য নেই। ধরা যাক একটি সেশন ভাইরাসে আক্রান্ত হলো, কিন্তু যেহেতু এগুলো ডিস্পোজেবল, ইউজার লগ-আউট করার সাথে সাথেই সেই ভাইরাস বা অন্য থ্রেট টিও চিরতরে হারিয়ে যাবে সেশনের সাথে। কিন্তু আগেই উল্লেখ করেছি কিছু কিছু ম্যলওয়ার নেটওয়ার্ক এট্যাক করতে সক্ষম। তাই হারিয়ে যাবার আগেই হয়ত সিফস শেয়ার (নেটওয়ার্ক শেয়ার) এ রক্ষিত ফাইল ইনফেক্ট করতে পারে। ট্র্যাডিশনাল ডেস্কটপ মুলত একটি হাব এ পরিনত হবে। এর মধ্যে কোন ফাইল থাকবেনা বটে, তবে এটি দিয়ে ফাইল এক্সেস করা হবে যেগুলো অন্য জায়গায় রক্ষিত। সাধারনত স্যান বা ন্যাস এ রাখা হয় এসব। এর সুবিধে হলো ডাটার স্ন্যপশট নেয়া যায়। যদি ফাইল ডীলিট হয়ে যায় বা ইনফেক্টেড হয়ে যায়, ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে পেছনে যাওয়া যায়।

দেখা যাচ্ছে সব কিছু ভার্চুয়াল করেও একদম ১০০% নিরাপদ থাকা যাচ্ছেনা। এটা কখনো সম্ভব হবেনা।

তথ্য-সূত্রঃ টেকবাংলার কামরুল হাসান 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।