জানতে-চাইফ্রিল্যান্স

বাংলাদেশ ব্যাংক কি মানুষের নাকি লুটেরাদের?

মাত্র ২০০০ ডলার রেমিটেন্স আসলেও “বাংলাদেশ ব্যাংক”-এর নিয়ম (!!!) অনুযায়ী আমাদেরকে নিজ নিজ ব্যাংকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে রেমিটেন্স আসার কারণ, কে পাঠিয়েছে, কেন পাঠিয়েছে, কবে প‍্রথম পরিচয়, প্রণয় কিভাবে হল, ইত্যাদি নানান তথ্য বিস্তারিত ডিক্লেয়ার ও লিখিত উপস্থাপন করতে হয়। বার বার, প্রতিবার করতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক হ্যাকবিদেশিদের কাছ থেকে প্রতিবার অর্থ উপার্জন করে তা দেশে আনতে গিয়ে মনে হয় যেন নিজ যোগ্যতায় সৎ উপায়ে পরিশ্রম করে উপার্জন করাই যথেষ্ট নয়— সরকার বাহাদুরের কাছ থেকে তা দ্বিতীয়বার উপার্জন করে হালাল করা আমাদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ও জন্মসূত্রে বাধ্যতামূলক। আমার উপার্জন করা ডলার আমি আমার ব্যাংক একাউন্টে আনবো, হুন্ডি করে তো আনছি না। আমার বিরুদ্ধে যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে তবে সরকার আমার একাউন্টে অবশ্যই অনুসন্ধান করতে পারেন, কিন্তু প্রতি ট্র্যানজেকশনে কৈফিয়ত দেয়া লাগলে তো নিজেকে চোর-চোর মনে হয়। চরমভাবে অপমানিত হই।

এখানেই শেষ না। এসব ঝামেলা এড়ানোর আশায় বেসিস—স্ট্যান্ডার্ড-চ্যাটার্ডের অফার পেয়ে ই.আর.কিউ. (এক্সপোর্টার্স রিটেনশন কোটা) একাউন্ট করলাম কিছুদিন আগে। কোন বিশেষ লাভ হল না। “বাংলাদেশ ব্যাংক”-এর নিয়ম অনুযায়ী কৈফিয়ত না দিতে পারলে মাস গড়িয়ে যায়, টাকা একাউন্টে আসে না।

বাংলাদেশ ব্যাংক কি মানুষের নাকি লুটেরাদের প্রমান দিতে হবে (2)আবার এই নতুন কিসিমের একাউন্টে যে ডলার জমা হয় তার নাকি কোন ইন্টারেস্ট/বেনিফিট নেই। সেখানেও বঞ্চনা— চাইলাম ডলার বন্ড কিনে রাখতে, কিন্তু আমরা নাকি বন্ড কেনার জন্য যোগ্য না। শুধুমাত্র এন.আর.বি. (দেশে ফেরত আসা এন.আর.বি.) হলে পরেই বাংলাদেশ ব্যাংকের বন্ড কেনা যাবে। পূর্ণ সম্মানের সাথেই বলছি, এন.আর.বি.-রা যা উপার্জন করেন তার সিংহভাগ ওখানেই খরচ করেন; দেশে পাঠান কিছু জমাকৃত অংশ (ব্যতিক্রমও আছে)। অন্যদিকে আমরা আমাদের উপার্জনের প্রায় শতভাগ দেশে নিয়ে আসি। এজন্যই কি এন.আর.বি.-রা বাংলাদেশ ব্যাংকের ফার্স্ট ক্লাস সিটিজেন, আমরা আইটি প্রোফেশনালরা হলাম চোর-ছ্যাচ্চোর গোত্রিও রিফিউজিবিশেষ?

বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের কষ্টে উপার্জন করা ডলার দিয়ে ফরেক্স ট্রেড করে, আমাদেরকে কোন বেনিফিট দেয় না। এর উপর এখন শুনছি বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচার হচ্ছে; এর আগেও যে হয়নাই তার গ্যারান্টি কে দিবে। কোন দিন হয়তো শুনবো বেনিফিট দুরের কথা আসলও চুরি হয়ে গিয়েছে। তখন কাকে দায়ী করব আমরা?

চুরি ধরা পড়ার সাথে সাথে গভর্ণর সাহেব পদত্যাগ করলেই কি সব ঠিক হয়ে যাবে? আমি তা বিশ্বাস করি না। বাংলাদেশ ব্যাংককে তার প্রকৃত পরিচয় জানতে হবে— “বাংলাদেশ” শব্দটা নামের আগে রাখতে হলে এ ব্যাংক-কে হতে হবে দেশের মানুষের ব্যাংক, লুটেরা মাফিয়াদের ব্যাংক না। কাজেও তার প্রমান দিতে হবে।

তথ্যসূত্রঃ ইয়াসিন আল ফরহাদ, ফাউন্ডারঃ ইন্টারনেট ও টেলিকম কনসিউমান এসোসিয়েশান অব বাংলাদেশ

লাকি এফএম

টেক-আসক্ত লাকিএফএম টেকমাষ্টার ব্লগের একজন উপ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রশাসক। পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ধ্রুবক অল রাউন্ডার এ কাজ করছেন। যোগাযোগঃ ফেসবুক টুইটার গুগল প্লাস ইমেইল

One thought on “বাংলাদেশ ব্যাংক কি মানুষের নাকি লুটেরাদের?

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।