বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ চুরিতে জড়িত ভারতীয় প্রতিষ্ঠান
ওয়ার্ল্ড ইনফরমেটিকস নামের ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি ঘটনায় জড়িত রয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার গঠিত তদন্ত কমিটি ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডি আরও দাবি করেছে তাদের কাছে এ ধরণের তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।
ঘটনার পর পরই ওয়ার্ল্ড ইনফরমেটিকস প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ভারতীয় নাগরিক রাকেশ আস্তানাকে নিয়োগ দেয়া হয়। চুরির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ঘণ্টা হিসেবে ভাড়া করে ভারতীয় সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ফায়ার আইকে। প্রায় ৩ কোটি টাকার বেশি ফায়ার আইকে দিতে হয়েছে তাদের ব্যর্থ কাজের জন্য।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভারসিটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ফায়ার আইয়ের কাজের সফলতা বা অর্জন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। অর্জনশূন্য ফায়ার আই তিন কোটি টাকা নিয়ে ফেরত গেল! তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশের আইটি সেক্টরকে ছোট করে বিদেশী আইটি প্রতিষ্ঠান দিয়ে কখনও উন্নয়ন করা সম্ভব নয়।
ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন ২ কর্মকর্তা সরাসরি জড়িত। তারা জেনেশুনেই সহায়তা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করা হলেও গত দেড় মাসে তা বাস্তবায়িত হয়নি।
ঘটনার কিছুদিন পরেই সুইফট’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় সুইফট’র গাফিলতি ছিল এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্বব্যাংক।
বিবৃতিতে বলা হয়, এ ব্যাপারে সুইফটের কোনো দায় নেই। সার্ভারের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পুরোপুরিভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের। পাসওয়ার্ড থেকে শুরু করে অভ্যন্তরীণ সব ব্যাংকিং পদ্ধতির নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের।
এদিকে, দৈনিক পত্রিকা যুগান্তরের এক প্রতিনিধি কথা বলেন তদন্ত কমিটির প্রধান ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন এবং কমিটির অন্যতম সদস্য বুয়েটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদের সঙ্গে। তারা বিস্তারিত কিছু বলতে অস্বীকার করলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন, কেন এখনও রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করা হচ্ছে না?
সব রিপোর্ট হাতে আসার পরেও এবং তথ্যপ্রমান থাকা সত্ত্বেও অর্থ মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না! তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সাথে সবচেয়ে বড় সহায়ক প্রতিষ্ঠান ছিল ভারতীয় সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ইনফরমেটিকস। যারাই মূলত বিপুল পরিমাণ অর্থ সরানোর ক্ষেত্রে কলকাটি নেড়েছে।
তথ্যসূত্র- দৈনিক যুগান্তর ও ইন্টারনেট