সিটিসেল বন্ধ করছে সরকার
অবশেষে গুজব সত্য হয়ে এলো,দীর্ঘদিন দেনার দায়ে থাকা সিটিসেল কে এবার বন্ধ করে দিতে যাচ্ছে সরকার। রোববার বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ সংস্থা বিটিআরসি গনমাধ্যমকে জানায় যে সরকারী পাওনা পরিশোধ না করার কারনে এবং লাইসেন্স নবায়ন নিয়ম না মানার কারনে যেকোনো মুহুর্তে বন্ধ হতে পারে সিটিসেল ।
১৯৮৯ সালে বাংলাদেশে প্রথম CDMA প্রযুক্তিনির্ভর কোম্পানি সিটিসেল পা রাখে । দক্ষিন এশিয়ায় সিটিসেল ই সর্বপ্রথম মুঠোফোন অপারেটর। কিন্তু সবচেয়ে পুরোনো কোম্পানি হয়েও ব্যবসায় ক্ষতির মুখ দেখতে দেখতে এখন এ কোম্পানি বিলুপ্তির মুখে। সিটিসেলের কাছে শুধুমাত্র সরকারের ই পাওনা প্রায় ৫০০কোটি টাকা। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানের কাছেও প্রায় ১হাজার কোটি টাকা ঋণ আছে প্রতিষ্ঠানটির।
সিটিসেল বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে বিটিআরসি থেকে জানা যায়, বারবার টাকা পরিশোধের নোটিশ দেওয়ার পরেও সিটিসেল থেকে কোনো সাড়া পান নি তারা।তারা আরো বলেন নিয়ম ভঙ্গের কারনে যেকোনো মুহুর্তে বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা থাকলেও গ্রাহকদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে প্রয়োজনীয় সময় দেওয়া হবে যাতে গ্রাহকরা বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ গনমাধ্যমকে বলেন,
বকেয়া পরিশোধে সিটিসেলকে বারবার সময় দেওয়ার পরও তা পরিশোধ না করায় সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিটিসেলের মোট গ্রাহক বর্তমানে ৭ লাখ যা সারাদেশের গ্রাহকের তুলনায় এক শতাংশের ও কম। গত পাচ বছরে (২০১০-২০১৫) সিটিসেল হারিয়েছে প্রায় ১০লক্ষ গ্রাহক। তার মূল কারন ছিলো বাকি কোম্পানিগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় অংশ না নেওয়া। সিটিসেলের টাওয়ার নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে না থাকার কারনেই অধিকাংশ গ্রাহক হারিয়েছে সিটিসেল। এছাড়া কিছুদিন আগে গ্রাহকদের চাপ ও পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় সিটিসেল তার ৮৭৬টি বিটিএস টাওয়ারের মধ্যে ৭০০টি টাওয়ার এবং নিজেদের অনেক অফিস বন্ধ করে দেয়। যার ফলে সিটিসেল গ্রাহকদের দুর্ভোগ এখন সীমাহীন।
চলুন দেখি সিটিসেলের ঋনের পরিমান,
২০১২সালে নবায়ন করা টুজি মোবাইল অপারেটর লাইসেন্স সংশ্লিষ্ট তরঙ্গ নবায়ন ফি এর ২য় ও ৩য় কিস্তি বাবদ ২২৯ কোটি টাকা, বার্ষিক লাইসেন্স ফি বাবদ ১০কোটি টাকা,২০১৩-২০১৬ বার্ষিক তরঙ্গ ফি(স্পেক্ট্রাম) বাবদ ২৭কোটি ১৪লাখ ৩৭হাজার টাকা, ২০১৪-২০১৬ সালের রিভিনিউ শেয়ারিং বাবদ ২৭ কোটি ৪৪লাখ ৬২হাজার টাকা,২০১১-২০১৬ সালের সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল বাবদ প্রায় ৮ কোটি ৯২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা,প্রযোজ্য ভ্যাট বাবদ ৩৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা ও বিলম্ব ফি ১৩৫ কোটি টাকা । সব মিলিয়ে ৪৭৭কোটি ৫১লাখ টাকা দেনার দায়ে ভুগছে সিটিসেল।