ওয়াইফাই রাউটার থেকে ভালো সার্ভিস পাওয়ার টিপস
ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না এমন মানুষের সংখ্যা কমছে দিন দিন। নেটিজেন বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে ওয়াই-ফাই ব্যবহারকারী। দামে সস্তা ও একই সংযোগ দিয়ে একাধিক ডিভাইসে নেট ব্যবহার করা যায় বলে ইন্টারনেট সংযোগ আছে কিন্তু ওয়াইফাই রাউটার নেই এমন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী আপনাকে মেগ্নিফাইন গ্লাস দিয়ে খুঁজতে হবে এ শহরে। বাড়িতে Wi-Fi রাউটার লাগিয়েই খালাস। এ নিয়ে বিশেষ আমরা কেউ মাথা ঘামাই না। বিশেষত আইপি অ্যাড্রেস। সার্ভিস প্রভাইডার বা আইটির ওপরই ছেড়ে দিই। রাউটার ঠিকঠাক কাজ না করলে কী করতে হবে, কী ভাবে ভালো কানেকশন মিলবে, তা নিয়ে আমরা ভাবিত নই। কিন্তু খুব সহজে সামান্য পরিবর্তনেই বাড়িয়ে ফেলতে পারি Wi-Fi-এর ক্ষমতা।
ওয়াই ফাই রাউটার‘র গতি ডবল ৭ উপায়ে
১. রাউটার রাখুন ঘরের মাঝখানে
ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার সময় আমরা যে জিনিসটা সবচেয়ে অবহেলা করি তা হচ্ছে অতিরিক্ত তার নেওয়া। তারের পরিমাণ কম থাকার কারণে রাউটারের জায়গা হয় ঘরের এক কোণে বা জানালার পাশে। ফলে অর্ধেক ওয়াই-ফাই সিগন্যাল রয়ে যায় বাইরে। এতে করে গতি হ্রাস পায়। কারণ ওয়াই-ফাই ছড়ায় ওমনি ডাইরেকশনালি, অর্থাৎ স্পিকার থেকে আওয়াজ যেভাবে চারদিকে ছড়িয়ে যায়, ঠিক সেইভাবে রাউটারের অ্যান্টেনাকে কেন্দ্র করে ওয়াই-ফাই চারদিকে ছড়িয়ে যায়। তাই রাউটারকে ঘরের মাঝখানে রাখার চেষ্টা করুন।
২. চোখের উচ্চতায় রাখুন
শুধু যে ঘরের মাঝখানে রাখলেই রাউটারের গতি ভালো পাবেন, তা কিন্তু নয়। উচ্চতারও এখানে যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। মাটি থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতা, অর্থাৎ চোখ বরাবর উচ্চতায় রাউটার রাখলে ভালো গতি পাওয়া যায়। পাশাপাশি রাউটারের সিগন্যালের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এমন কোনো ডিভাইস, যেমন—কর্ডলেস ফোনের বেস, অন্য কোনো রাউটার, প্রিন্টার, মাইক্রোওয়েভের সঙ্গেও রাউটার রাখা ঠিক নয়।
৩. কিনুন একটু বড় অ্যান্টেনা
রাউটার কেনার সময় অ্যান্টেনা কেমন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কেনার সময় খেয়াল রাখা উচিৎ রাউটারের অ্যান্টেনা কি সাধারন কপার নাকি পিসিবি অ্যান্টেনা। আপনার রাউটারের সঙ্গে যে অ্যান্টেনা পাচ্ছেন, তা ভালো নাও হতে পারে। কারণ সস্তায় দিতে গিয়ে, অনেক সময়ই ভালো অ্যান্টেনা দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে, ভালো হয়, যদি আপনার রাউটারের সঙ্গে মানানসই অ্যান্টেনা আলাদা করে কিনে নেন তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি যে রাউটারটি ক্রয় করবেন তাতে অ্যান্টেনা রিমুভ করার অপশন থাকতে হবে। চাইলে আপনি কয়েক কিলোমিটার কভার করতে ডিরেকশনাল অ্যান্টেনাও কিনতে পারেন। তাতে রেঞ্জের পাশাপাশি Wi-Fi-এর শক্তিও বাড়বে।
৪. কম ডিভাইস সংযুক্ত করা
বাড়িতে বন্ধু বা আত্মীয় আনাগোনা খুব বেশি? সবাইকে ওয়াই-ফাইয়ের পাসওয়ার্ড দিয়ে বেড়ান? তাহলে আপনার ওয়াই-ফাইয়ের গতি কমতে বাধ্য। যদি দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ না হয়, তাহলে একসঙ্গে অনেক বেশি ডিভাইস সংযোগ না দেওয়াই ভালো। এখন অনেক রাউটারে ডিভাইস ব্লক করার সুযোগ থাকে। যদি দেখা যায়, কোনো নির্দিষ্ট ডিভাইস অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথ টেনে নিচ্ছে, তাহলে তাকে ব্লক করে দিন। এ ছাড়া ফ্রি ওয়াই-ফাই পেলে অনেকেরই ডাউনলোড করার শখ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এতে করেও রাউটারের গতি কমে যায়।
৫. রিপিটার ব্যবহার করা
ওয়াই-ফাইয়ের গতি বাড়িয়ে দিতে রিপিটারের জুড়ি নেই। বাজারে বা অনলাইন শপে প্রচুর রিপিটার পাওয়া যায়। রাউটারের সঙ্গে সংযুক্ত করে নেওয়াও সহজ। অনেক সময় বাড়িতে পুরোনো রাউটার থাকলে সেটি প্রয়োজনমত কাভারেজ দেয়না। রাউটার এ সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি দেবে আপনাকে।
৬. রাউটার সিকিউরিটি
রাউটারে থাকা ডিফল্ট সেটিং পরিবর্তন করে নিজের মত করে সেট করতে হবে। তার জন্য প্রথমেই রাউটারের আইপি অ্যাড্রেস জানাটা জরুরি। উইন্ডোজ পিসির জন্য কম্যান্ড প্রম্পট (Win+R then type cmd) খুলুন। সেখানে টাইপ করুন ipconfig। আইপি কনফিগারিং খুলে গেলে, ‘ডিফল্ট গেটওয়ে’ আইপি অ্যাড্রেসে যেতে হবে। আর MAC হলে, খুলতে হবে Network eway’ আইপি অ্যাড্রেস। এরপর নেটওয়ার্ক পারফরমেন্সে গিয়ে আইপি অ্যাড্রেস কপি করুন। এরপর ওয়েব ব্রাউজারে রাউটারের আইপি অ্যাড্রেস টাইপ করলে, ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড চাইবে। সাধরণত, অ্যাডমিন ও পাসওয়ার্ড বা দুটোতেই অ্যাডমিন লিখলেই চলে যায়। যদি না তা আগে পরিবর্তন হয়ে থাকে। Wi-Fi এর নাম, সিকিওরিটি ও পাসওয়ার্ড পরেও বদলানো যায়। আরও সিকিওর নেটওয়ার্কের জন্য WPA2-AES বেছে নিন। আপনি বেছে নিতে পারেন stop broadcasting the Wi-Fi networkটিও। সেক্ষেত্রে নেটওয়ার্কের নাম কোনও ডিভাইসে দেখাবে না। ম্যানুয়ালি কানেক্ট করতে হলে, Wi-Fi-এর নাম ও পাসওয়ার্ড আপনাকে জানতে হবে। বেশির ভাগ রাউটারে MAC ID filtering-এর সেটিং রয়েছে।
[youtube https://www.youtube.com/watch?v=m9aAjnISM1M]