মোনালিসার রহস্য উদ্ধারের চেষ্টা
লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির বিশ্ববিখ্যাত ছবি মোনালিসা – যার ভুবনভোলানো রহস্যমাখা হাসি মানুষকে এত বছর ধরে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছে, তার পেছনের আসল মানুষটি কে তা নিশ্চিতভাবে জানার জন্য গবেষক ও ঐতিহাসিকরা চেষ্টা চালাচ্ছেন অনেকদিন ধরেই।
ধারণা করা হয় যে লিসা ঘেরার্দিনি নামে মধ্যযুগীয় এক ইতালীয় মহিলা – যিনি ছিলেন ফ্লোরেন্সের এক ব্যবসায়ীর স্ত্রী – তাঁর মুখাবয়বই এঁকেছিলেন দ্য ভিঞ্চি মোনালিসা নামের ছবিটিতে।
এর আগে দুদুবার সেই আসল মোনালিসা বা লিসা ঘেরার্দিনির দেহাবশেষ উদ্ধারের জন্য প্রত্নতাত্ত্বিক খোঁড়াখুড়ি চালানো হয়েছিল, কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি।

কিন্তু এখন ইতালির একদল প্রত্নতাত্ত্বিক ফ্লোরেন্সের একটি মঠ বা মনাস্টারিতে সমাহিত একটি কঙ্কাল উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন – যা চিরতরে মোনালিসা রহস্যের সমাধান করতে পারবে বলে তারা নিশ্চিত।
ওই গবেষক দলের প্রধান সিলভানো ভিনচেত্তি জানান, খুব স্পষ্ট ঐতিহাসিক নথিপত্র তারা পেয়েছেন, যাতে দেখা যাচ্ছে ১৫৪২ সালের ১৫ জুলাই এখানেই লিসা ঘেরার্দিনিকে সমাহিত করা হয়েছিল – যিনি ছিলেন লিওনার্দোর বিখ্যাত মোনালিসা পেইন্টিংয়ের প্রথম মডেল।
ওই মনাস্টারির গহ্বর থেকে কঙ্কালটি উদ্ধার করার পরেও অবশ্য গবেষকদের কাজ ফুরোচ্ছে না, নিশ্চিতভাবে তাদের প্রমাণ করতে হবে সেটি লিসা ঘেরার্দিনিরই কঙ্কাল। এর জন্য চালাতে হবে পর পর অনেকগুলো পরীক্ষা, যার মধ্যে থাকবে কার্বন-১৪ আইসোটোপ পরীক্ষা ও নানা ধরনের হিস্টোলজিক্যাল পরীক্ষা।
কঙ্কালটির সঠিক বয়স ও পরিচয় নিরূপণ করেই কেবল বিজ্ঞানীরা বলতে পারবেন সেটি লিসা ঘেরার্দিনির। এরপর সেই কঙ্কাল থেকে বিজ্ঞানীরা তাঁর মুখের আদল বা গঠনটি নতুন করে তৈরি করার চেষ্টা করবেন এবং মিলিয়ে দেখবেন পাঁচশো বছর আগে আঁকা লিওনার্দোর সেই মাস্টারপিসের সঙ্গে।
নিশ্চিতভাবে এখনও কিছুই প্রমাণিত হয়নি, কিন্তু মোনালিসার আসল মডেলকে উদ্ধারের উত্তেজনায় এই প্রত্নবিজ্ঞানীরা এখন থেকেই ভীষণ রোমাঞ্চিত!