সেরা ফ্রি পিসি সফটওয়্যার ২০১৭ (২য় পর্ব)
২০১৭ সালের সেরা পিসি সফটওয়্যারগুলো নিয়ে তৈরি করা প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পর্ব এটি।
ফায়ারওয়ালস
৩১. জোনঅ্যালার্ম ফ্রি ফায়ারওয়াল বাই চেক পয়েন্ট
এই ফায়ারঅয়ালটি সহজে ইন্সটল করা যায়। এর ব্যবহারও অনেক সহজ। এই ফায়ারওয়ালটি পিসিকে যেকোনো ভাইরাস বা হ্যাকারের বহিরাক্রমণ থেকে রক্ষা করে, অভ্যন্তরীণ ডাটা সুরক্ষিত রাখে,সকল কম্পিউটার প্রোগ্রাম পর্যবেক্ষণ করে।
৩২. কমোডো ফায়ার ওয়াল
‘কমোডো ফায়ার ওয়াল’ এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্য যেকোনো ফায়ারওয়াল সফটওয়্যারের তুলনায় অনেক ভাল। এটি পিসিকে হ্যাকারের বহিরাক্রমণ থেকে রক্ষা করে, ম্যালওয়্যার ভাইরাস সনাক্ত করতে পারে। এর ওয়েব ব্রাউজার ‘কমোডো ড্রাগন’ ব্রাউজারের নিরাপত্তা দান করে।
৩৩. টাইনি ওয়াল
সফটওয়্যারটিকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে এটি অন্যদের তুলনায় ভিন্ন ও আকর্ষণীয় হয়। উইন্ডোজে যেসব বিল্ট-ইন ফায়ারওয়াল আছে তাদের কাজের সুবিধা বৃদ্ধি করা এর মূল লক্ষ্য। আপনার পিসিকে সুরক্ষিত রাখার জন্য যা যা করা প্রয়োজন এই সফটওয়্যারটি করতে পারবে। এমনকি এটি প্রয়োজনে সব সফটওয়্যার ব্লক করে আপনার পিসিকে নিরাপদে রাখবে। আপনি যেই যেই সফটওয়্যার চান শুধু সেই সফটওয়্যারটি কাজ করবে।
ফাইল রিকভারি
৩৪. রেকুভা
‘পিরিফর্ম’ কোম্পানির ‘রেকুভা’ একটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল রিকভারি সফটওয়্যার। এটি সহজে হারানো ফাইল খুঁজে বের করবে। এটি পোর্টেবল। তাই ইউ এস বি ড্রাইভে করে ব্যবহার করা যায়।
৩৫. টেস্ট ডিস্ক
টেস্ট ডিস্ক হারান ফাইল খুঁজে বের করা ছাড়াই আরও অনেক কাজ করতে সক্ষম। এটি একটি হার্ডড্রাইভের যেকোনো অংশ পুনঃরুদ্ধার করতে পারে। এটি ব্যবহার আপনার কাছে সুবিধাজনক মনে না হতেও পারে। তবে ফাইল রিকভারি সফটওয়্যার হিসেবে এটি অনেক শক্তিশালী।
৩৬. ইরেজার
ইরেজার ফাইল পুনঃরুদ্ধার না করলেও আপনার ফাইলে যাতে অন্য কেউ হাত না দিতে পারে সে ব্যবস্থা করে। কোন ফাইলকে লুকিয়ে রাখার বিশেষ ব্যবস্থা করে। কিছু সময়ের জন্য ডিস্কে ফাঁকা জায়গার সৃষ্টি করে। আপনি এর মাধ্যমে উইন্ডোজ এক্সপ্লোরারে এক্সটেনশন তৈরি করতে পারেন। যার মাধ্যমে ফাইল মুছে ফেলে ফাঁকা জায়গা তৈরি করা যায়।
৩৭. মিনিটুল পাওয়ার ডাটা রিকভারী
উইন্ডোজ ৭, ৮ এবং ১০ এ কাজ করে। ফাইল পুনঃরুদ্ধারের কয়েক ধরণের ব্যবস্থা আছে এতে। ছোট একটি ফাইল থেকে শুরু করে হার্ডড্রাইভের সম্পূর্ণ একটি অংশ পুনঃরুদ্ধার করতে পারে এটি। এমনকি কোন সিডি বা ডিভিডিতে বিদ্যমান ফাইলও পুনঃরুদ্ধার করতে পারে। ছবি, গান, ভিডিও পুনঃরুদ্ধারেরও ব্যবস্থা আছে এতে। এর ফ্রি ভার্সন ১ জিবি ডাটা পুনঃরুদ্ধার করতে পারে।
ফাইল ট্রান্সফার
৩৮. ফাইলজিলা
বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফাইল ট্রান্সফার প্রোটোকল হল ‘ফাইলজিলা’। যারা ওয়েবসাইটে প্রচুর ফাইল ট্র্যান্সফার করে; তারা মূলত এটি ব্যবহার করে। এর মধ্যে ‘ক্লাইন্ট’ এবং ‘সার্ভার’ নামে ২টি অপশন আছে।
৩৯. টেরাকপি
উইন্ডোজ বিভিন্ন ফোল্ডার ও ড্রাইভে সহজেই ফাইল কপি করতে পারে। তবে এ কাজটি দ্রুত ও সুচারুরুপে করতে সাহায্য করে ‘টেরাকপি’ সফটওয়্যারটি। এটি কোন ঝামেলা ছাড়াই সহজে ফাইল ট্রান্সফার করে। ফাইল ট্র্যান্সফার ছাড়াই এটি ফাইল ট্রান্সফার সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য প্রদান করে।
৪০. ইউ টরেন্ট
টরেন্ট ফাইল ডাউনলোড ও আপলোডের জন্য এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় ফাইল ট্রান্সফার সফটওয়্যার। এটি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। আবার ওয়েবসাইট বা মোবাইল একাউন্টের সাথে যুক্ত হয়েও কাজ করতে পারে। এতে বিজ্ঞাপনজনিত সমস্যা দেখা যায়, যা প্রতি বছর $৫ প্রদানের মাধ্যমে দূর করা যায়।
৪১. ভুজ
‘ভুজ’ মিডিয়া সার্ভারের সাথে সমন্বিত হয়ে টরেন্ট ফাইল আপলোড ও ডাউনলোড করে। এর ২টি রুপ আছে। তবে এর সাধারণ ফ্রি ভার্সনের ফিচারগুলো অন্য যেকোনো সফটওয়্যারের তুলনায় দেখার মত। ওয়েব বা মোবাইলেও এর ব্যবহার আছে।
ফাইল ম্যানেজমেন্ট
৪২. মাল্টি কমান্ডার
ফাইল ম্যানেজার হিসেবে মাল্টি কমান্ডার সবচেয়ে ভাল। এতে আছে মাল্টি ট্যাবের ব্যবস্থা, সেই সাথে ফাইল ভিউয়ার ও ডুয়েল প্যানেল। এর এত্ত এত্ত ফিচার আছে যা এখানে বলে শেষ করা যাবেনা।
৪৩. ফ্রি কমান্ডার
মাল্টি কমান্ডারের মতই আরেকটি কমান্ডারভুক্ত ফাইল ম্যানেজার হল ফ্রি কমান্ডার। এতেও ডুয়েল প্যানেল এবং মাল্টিপল ট্যাবের ব্যবস্থা আছে। যার মাধ্যমে উইন্ডোজের যেকোনো ফাইল পুঙ্খানুপুঙ্খ রুপে পর্যবেক্ষন করা যায়।
৪৪. ভার্চুয়াল ক্লোন ড্রাইভ
আপনার ড্রাইভ ছবি দিয়ে পূর্ণ হয়ে গেছে? এখন নতুন ছবি ভরতে আগের ছবি মুছে ফেলতে হবে? চিন্তা নেই। কারণ এই সফটওয়্যারটি ছবিকে মাউন্ট (আইএসও, বিআইএন, সিসিডি ফরম্যাটে রুপান্তর) করতে সক্ষম। যা ড্রাইভে অল্প জায়গায় সংরক্ষণ করা যায়।
৪৫. সিডি বার্নার এক্সপিঃ
নাম শুনে ভাববেন না এটি শুধু উইন্ডোজ এক্সপি এর জন্য তৈরি করা হয়েছে। সব ধরণের উইন্ডোজ সিস্টেমে এটি ব্যবহার করা যায়। এটি একটি আপডেটেড টুল যা সিডি বা ডিভিডি তে আইএসও ইমেজ বার্ন করতে পারে। এটি বিভিন্ন ভাষায় পাওয়া যায়।
ফাইল ভিউয়ার ও কনভার্টার
৪৬. ইয়ারফ্যানভিউ
গত ২ দশক ধরে ফাইল ভিউয়ার ও কনভার্টার হিসেবে ‘ইয়ারফ্যানভিউ’ সবচেয়ে এগিয়ে আছে। এটি বিভিন্ন টাইপের ফাইল প্রদর্শন করে ও তা কনভার্ট করতে পারে। মিডিয়া ফাইলও প্রদর্শন করতে পারে।
৪৭. এক্সএনভিউ এমপি
এর আপডেটেড ভার্সন বিভিন্ন প্লাটফর্মে কাজ করে। সাধারণ ফাইল কনভার্ট ছাড়াও এটি প্রায় ৫০০ ধরণের ইমেজ ফরম্যাট নিয়ে কাজ করতে পারে। এটি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ও শিক্ষাগত কাজে ফ্রিতে ব্যবহার করা যায়।
৪৮. ফাস্টস্টোন ইমেজ ভিউয়ার
ইমেজ ফাইল প্রদর্শন করে ও তাদের ব্যবস্থাপনা করে। এটি অসংখ্য ইমেজ ফরম্যাটের উপর কাজ করতে পারে। এমনকি ডিজিটাল ক্যামেরা থেকে “র’ ইমেজ” নিয়েও কাজ করতে পারে।
ফিন্যান্স
৪৯. মিন্ট.কম
এর ওয়েব এবং মোবাইল ভার্সন আছে। ফিন্যান্স সংক্রান্ত কাজে ‘কুইকেন’ এবং ‘মাইক্রোসফট মানি’ এর যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী এটি। আপনার অনলাইনে সংরক্ষিত অর্থের সাথে নিরাপদে সংযোগ স্থাপন করতে পারে। মিন্ট.কম নতুন একাউন্ট এবং ক্রেডিট কার্ডের উপর বিভিন্ন অফার দিচ্ছে।
গ্রাফিক্স ও ইমেজিং
৫০. জিআইএমপি
ইমেজ এডিটর হিসেবে এটি বরাবরের মতই সবার উপরে। এর বিভিন্ন টুলের মাধ্যমে আপনি সবচেয়ে সুন্দর ও বাস্তব সম্মত গ্রাফিক্স ডিজাইন করতে পারবেন।
৫১. পেইন্ট.নেট
পেইন্ট.নেট সফটওয়্যারটি শুধুমাত্র উইন্ডোজে ব্যবহারের জন্য। অনেকটা ফটোশপের মতই এর কাজ। এটি ব্যবহার করা সহজ। দ্রুত কাজ করে। ছবির ছোট-খাট ত্রুটি সহজেই দূর করে।
৫২. ইঙ্কস্কেইপ
‘ইঙ্কস্কেইপ’ এর মাধ্যমে আকর্ষণীয় ও নজরকারা ডিজাইন ও ড্রয়িং সমৃদ্ধ ‘এসভিজি’ ফরম্যাটের ইমেজ ফাইল তৈরি করা যায়। এই কাজে সহায়তা করে এর ডিজাইনিং টুলস গুলো।
৫৩. আইসক্রিম ইমেজ রিসাইজার
সফটওয়্যারটিতে অনেক দারুণ সব প্রোগ্রাম আছে। যেকোনো ছবিকে রিসাইজ করে প্রয়োজনীয় ডিজাইন ও গ্রাফিক্স যোগ করা যায় এর মাধ্যমে। ছবিকে ড্র্যাগ করে ‘সাইজ এন্ড ডেস্টিনেশন’ ফোল্ডারে এনে একে সহজেই ডিজাইন যোগ করে কনভার্ট করা যায়।
৫৪. রেন্ডারম্যান
‘পিক্সলার’ এর মতো ‘রেন্ডারম্যান’ও একটি চমৎকার গ্রাফিক্স ও ইমেজিং সফটওয়্যার। এটি পিক্সলার কর্তৃক ডেভেলপ করা হয়েছে। অব্যবসায়িক সকল কাজে ফ্রিতে ব্যবহার করা যায়। তবে ‘অটোডেস্ক’ এর ‘মায়া’ সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে এর মাধ্যমে থ্রিডি মডেলও তরি করা যায়। তবে শুধুমাত্র ৬৪ বিটের উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে এটি কাজ করে।
৫৫. পিক্সলার
‘অটোডেক্স’ এর পিক্সলার ফটোশপের জন্য সেরা সফটওয়্যার। এর এপ ভার্সনও আছে। তাছাড়া এটি ‘এডিটর’ এবং ‘এক্সপ্রেস’ এই ২টি ভার্সনে পাওয়া যায়। ‘পিক্সলার’ এপটি ছবি শেয়ার করার পাশাপাশি কোলাজও তৈরি করে। এর আছে কিছু উন্নত ইফেক্ট ও ফিল্টার যা ছবিতে আনে শৈল্পিক ছোয়া।
৫৬. অ্যাডব ফটোশপ এক্সপ্রেস
‘অ্যাডোব ফটোশপ এক্সপ্রেস’ সফটওয়্যারটিতে আছে অত্যাধুনিক টুলস ও আকর্ষণীয় ফিল্টার। ছবিতে ইচ্ছামতো ফিল্টার যোগ করে আনতে পারেন নতুন মাত্রা। এটি আপনার ছবিকে অটো-ফিক্স করতে পারবে। তাই কম সময়ে দ্রুত কাজ করা যায়।
ল্যাংগুয়েজ
৫৭. ডুওলিনগো
নতুন ভাষা শেখার জন্য বছরের সেরা এপ এটি। অনলাইন এবং মোবাইল ভার্সনেও এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।
ম্যাপস
৫৮. গুগল আর্থ প্রো
‘গুগল ম্যাপ’ এর মতো প্রায় একই এডভান্সড ফিচার সম্পন্ন সফটওয়্যারটি হল ‘গুগল আর্থ প্রো’। বিশ্বের প্রতিটি স্থানের ম্যাপই এখানে পাওয়া যাবে। প্রয়োজনে ম্যাপ প্রিন্টও করা যাবে।
৫৯. বিং ম্যাপস/ উইইন্ডোজ ম্যাপসঃ
‘গুগল ম্যাপ’ এবং ‘গুগল আর্থ’ এর প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বী হল ‘বিং ম্যাপ’। মাইক্রোসফট কোম্পানির এই সফটওয়্যারটি কেবল উইন্ডোজ এবং উইন্ডোজ ফোনে ব্যবহার করা যায়। উইন্ডোজ ১০ এ এটি আগে থেকেই ইন্সটল করা থাকে।
৬০. ওয়েজঃ
ছোট-খাট ড্রাইভিং কাজে ব্যবহারের জন্য এটি অনেক উপযোগী একটি মোবাইল এপ। তবে মোবাইল ছেড়ে এটি উইন্ডোজেও এসেছে। ডেস্কটপ ব্যবহারকারীদের জন্য এতে লাইভ ম্যাপ পাওয়া যায়। বর্তমানে এর আইফোন ভার্সনও পাওয়া যাচ্ছে।