হ্যাকাথন নিয়ে কিছু কথা
হ্যাকাথন, মোটামুটি পুরনো একটি প্রতিযোগীতা হলেও আমাদের দেশে এখনো তেমন প্রসার ঘটেনি এটির। অনেক শিক্ষার্থী জানেই না হ্যাকাথন কি? ফলে অংশ গ্রহনও করে না। তাই হ্যাকাথন এ উৎসাহিত করতেই আজ এ লেখা।
হ্যাকাথন কি?
হ্যাকাথন হচ্ছে একটি on-site প্রতিযোগিতা, যেখানে প্রতিযোগীরা একটি লম্বা সময় ধরে কোনো একটি সমস্যার সমাধান বের করে এবং তা বাস্তবায়ন করারও চেষ্টা করে।
এটি ২৪ ঘন্টা থেক শুরু করে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতি দলে ৩ থেকে ৪ জন বা এরও বেশী প্রতিযোগী থাকতে পারে। সবাইকে প্রয়োজনীয় বসার যায়গা দেওয়া হয়। সাথে ইন্টারনেট সংযোগ, কফি সহ ফ্রি খাবার ব্যবস্থাও থাকে।
প্রতিযোগিদের এক বা একাধিক বাস্তবজীবন সম্পর্কিত সমস্যা দেওয়া হয়, প্রতিযোগীরা সমস্যাটির সমাধান হিসেবে নতুন (unique) এবং সৃজনশীল (creative) ধারণা প্রদান করে এবং সমাধান বাস্তবায়ন (implement) করার চেষ্টা করে। সমাধান হতে পারে desktop software অথবা Andorid, iOS বা Web অ্যাপ তৈরির মাধ্যমে। এছাড়া ডিভাইস তৈরিও সমাধানের অংশ হতে পারে।
The goal of a hackathon is to create usable software. Hackathons tend to have a specific focus, which can include the programming language used, the operating system, an application, an API, or the subject and the demographic group of the programmers. In other cases, there is no restriction on the type of software being created.
– wikipedia
বিচারের মানদন্ড
এ ধরনের প্রতিযোগিতায় মূলত নিচের বিষয় গুলো বিচারকরা মানদন্ড (criteria) হিসেবে দেখেনঃ
- Idea: আইডিয়া কতটুগু গুন (quality) সম্পন্ন এবং কতটুকু উদ্ভবনীমূলক (innovative).
- Utility: আইডিয়াটি কতটুকু কাজের? কতটুকু উপকারী? কতমানুষের উপকারে আসতে পারে?
- Feasibility: আইডিয়াটি কতটুকু বাস্তবসম্মত? আদোও বাস্তবায়ন করা সম্ভব কিনা?
Will this project actually have social impact? Is it being designed for the social/cultural/political context in which it will be implemented? And if not, what steps do we need to take and what people do we need to substantially involve to get there?
– Medium
- Architectural design: প্রস্তাবিত সিস্টেমটি কিভাবে কাজ করবে তার খসড়া ডিজাইন (Activity Diagram অথবা খসড়া ডিজাইন হতে পারে)
- Demo/Prototype: সম্পূর্ন, আংশিক, অথবা মেকি (dummy) সিস্টেম তৈরি।
- Presentation: প্রস্তাবিত সমাধানটি বিচারকদের কাছে প্রদর্শন (হতে পারে slide এর মাধ্যমে)
কেন হ্যাকাথনে যাব?
হ্যাকাথনে যাবেন কারন,
- গ্রুপে কাজ করার অভিজ্ঞতাঃ গ্রুপ করে টানা ২৪ঘন্টা+ একসাথে থেকে কাজ করার অভিজ্ঞাতা অন্য সময় সচরাচর হয়না।
- সীমিত সময়ে সমস্যা সমাধান করার অভিজ্ঞতাঃ সীমিতি সময়ে একটা আইডিয়ার বের করা এবং তা বাস্তবায়ন করার fun experience হ্যাকাথনে না গেলে বুঝা সম্ভব নয়!
- নতুনদের সাথে পরিচিত হওয়াঃ হ্যাকাথনে বিভিন্ন যায়গা থেকে অনেক ধরনের প্রযুক্তি loving people আসে। তাদের সাথে পরিচিত হওয়া, একই রুমে থেকে কাজ করা, তাদের কাজ দেখা ইত্যাদি হ্যাকাথনের বড় বৈশিষ্ট্য।
- Presentation দেওয়ার অভিজ্ঞতাঃ সীমিত সময়ের ভিতর সব কিছু প্রস্তুত করে আবার তা বিচারকদের সামনে উপস্থাপন করার যে thrill যারা হ্যাকাথনে অংশগ্রহন করেছেন তারাই জানেন!
- ফ্রি কিটঃ হ্যাকাথনে টি-শার্ট সহ পাওয়া যায় অনেক কিছু। আর ফ্রি খাবার তো আছেই! 😉
- চাকরিতে দেখানোর মত একটা সার্টিফিকেট! 😉
হ্যাকাথন কাদের জন্য?
হ্যাকাথন মূলত সবার জন্য। প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহ আছে এরকম সবার জন্যই হ্যাকাথন।
হ্যাকাথনে অংশগ্রহনের জন্য কোডিং স্কিল থাকা বা প্রো-কোডার হওয়ার কোনোই দরকার নেই। হ্যাকাথন হচ্ছে শেখার যায়গা। অভিজ্ঞতা লাভের যায়গা। আর আইডিয়া awesome হয়ে গেলে তো পুরষ্কারও পেয়ে যেতে পারেন! 🙂
এখানে লক্ষনীয় হ্যাকাথনের মূল লক্ষ awesome innovative বাস্তবসম্মত আইডিয়া বের করা, এবং তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা।
বাস্তবায়ন মানে ২৪ ঘন্টার ভিতর অ্যাপস তৈরি করে ফেলা বা ডিভাইস তৈরি করে ফেলা লক্ষ নয়। বিচারকদের সামনে প্রতিযোগীদের তাদের আইডিয়াটি উপস্থাপন করতে হয় উপরে দেওয়া criteria সমূহের উপর ভিত্তি করে। যার জন্য সফটওয়্যার বা ডিভাইস বানানোর দক্ষতার কোনোই প্রয়োজন পড়ে না। অর্থাৎ যে কারো জন্যই এ হ্যাকাথন।
বাস্তব জীবনে আমাদের সীমিত সময়ে সমস্যা সমাধানের প্রয়োজন হতেই পারে। আর সেটা কম টাকায় ( 😉 ) পাওয়ার মাধ্যম হচ্ছে হ্যাকাথন!
তো আর দেরি কেন!
খুঁজে দেখুন আশেপাশে কোথায় হচ্ছে হ্যাকাথন এবং নিজের বন্ধুদের সাথে টিম করে চলে যান হ্যাকার হয়ে…
Kivabe hackathon a add join kora jay?
বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি এবং প্রতিষ্ঠান এগুলো আয়োজন করে। বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির ফেস্ট গুলোতে খবর নিতে পারেন। সেগুলোতে জানতে পারবেন।