স্পাইং মাত্র ২০ ডলার!
জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক তাদের একটি অ্যাপ ফেসবুক রিসার্চ এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে মাত্র ২০ ডলারের বিনিময়ে তাদের তথ্য নিচ্ছে। টেক ক্রাঞ্চের রিপোর্ট থেকে এমন চাঞ্চলকর তথ্য জানা গেছে। তাহলে কি আমাদের সকল তথ্যের মূল্য মাত্র ২০ ডলার?
ফেসবুক রিসার্চ অ্যাপটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে মাত্র ২০ ডলারের বিনিময়ে তার ফোনের সকল তথ্য, ইন্টারনেট কার্যক্রম, আমাজনের হিস্টোরিসহ আরো অনেক তথ্য নিয়ে যাচ্ছে। এই সব তথ্যের বিনিময়ে প্রতিমাসে মাত্র ২০ ডলারের গিফট কার্ড দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
অ্যাপটি ২০১৬ সাল থেকে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে। ব্যবহারকারীদের তথ্য নেওয়ার কাজটি প্রোজেক্ট অ্যাটলাস নামের গবেষণা প্রোগামের মাধ্যমে চলছে। ব্যবহারকারীদের মাত্র ২০ ডলার প্রদান করে তাদের কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
তথ্য সংগ্রহ করার দায়ে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোর থেকে এই অ্যাপটিকে ব্যান করা হয়। কিন্তু গুগল প্লে স্টোরে এখনো অ্যাপটি রয়েছে।
এই বিষয়ে ফেসবুক জানিয়েছে, ১৩ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যে যারা নিজ ইচ্ছায় নিজের প্রায় সব তথ্য দিতে রাজি হয় তাদেরকে প্রতিমাসে ২০ ডলারের গিফর্ট কার্ড দিয়ে থাকে অ্যাপটি।
ব্যবহারকারীদের এই সব তথ্য দিয়ে ব্যবসায়ীক অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। বাজার বিশ্লেষণ করতে সুবিধা হয়। ব্যবহারকারীদের পছন্দ অপছন্দ জেনে ব্যবসায়ীকভাবে অনেক লাভবান হওয়া যায়। আর তা মাত্র ২০ ডলারের বিনিময়েই হওয়া যাচ্ছে। ব্যবহারকারীদের মাত্র ২০ ডলার প্রদান করে মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে নিচ্ছে।
এই বিষয়ে টেক ক্রাঞ্চ জানিয়েছে, ১৩ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদেরকে বেটা টেস্টিং সার্ভিস বেটাবাউন্ড, অ্যাপ্লোজ এবং ইউটেস্টের মাধ্যমে নিয়ে আসা হতো। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের নিয়ে আসা হতো। তাতে বলা হতো পেইড সোশ্যাল মিডিয়া স্টাডিতে অংশগ্রহণকারী লাগবে এবং বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুণ। আর এই সকল বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো ইনস্টাগ্রামে এবং স্ন্যাপচ্যাটে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক উইল স্ট্রাফাচ এই বিষয় নিয়ে বলেন, ফেসবুক রিসার্চ অ্যাপটি যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে থাহলে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেক পরিমাণে তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে। ব্যবহারকারীদেরকে না জানিয়েই নিরবে এই হাতিয়ে নেওয়ার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেছেন, ফেসবুক এই অ্যাপটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ফোন থেকে অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মেসেজ, ইমেইল, ব্রাউজিং হিস্টোরি, সার্চ, গ্যালারির ছবি-ভিডিও, ওয়েব ব্রাউজিং এবং লোকেশনের তথ্যসহ আরো অনেক কিছু নিয়ে থাকতে পারে। ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ই-কমার্স সাইট আমাজনের অর্ডার হিস্টোরির স্কিনশট চাওয়া হয়েছে।
ফেসবুক রিসার্চ অ্যাপটির মাধ্যমে যেসব তথ্য সংগ্রহ করা হতো তা ওনাভোর সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত এক ওয়েব ঠিকানায় পাঠানো হতো। ওনাভো অ্যাপটিও ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করতো। এর ফলে অ্যাপ স্টোর থেকে তা সরিয়ে দেয় অ্যাপল। ২০১৪ সালে ১২০ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে অ্যাপটি কিনে নেয় ফেসবুক। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের মোবাইলের বিভিন্ন অ্যাপের তথ্য সংগ্রহ করা হতো।
ফেসবুকের মতো প্রতিষ্ঠানের কাছে আমাদের মূল্যবান তথ্যের মূল্য মাত্র ২০ ডলার। আমাদের ইন্টারনেট জগত এই সবের ফলে হচ্ছে আরো বিপদজনক। এছাড়া বেআইনিভাবেও তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে তার জন্য কিন্তু কোনো অর্থও দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের প্রাইভেসি বলতে কিছু নেই এই সব প্রতিষ্ঠানের কাছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত জানাতে পারেন।
তথ্য- টেক ক্রাঞ্চ