ফেসবুক প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন বর্জন
ফেসবুক প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন বর্জন ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। সম্প্রতি বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠান ফেসবুক থেকে তাদের বিজ্ঞাপন সড়িয়ে নিচ্ছে। ফেসবুকে নতুন করে বিজ্ঞাপন দেওয়াও বর্জন করছে তারা। কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম এ নিয়ে প্রতিবেদন করলে বিষয়টি সামনে আসে।
অ্যান্টি ডিফেম্যাশেন লীগ, এনএএসিপি এবং কালার অফ চেঞ্জ সহ একাধিক নাগরিক অধিকার সংস্থাগুলো ‘হিট পজ অন হেট’ নামে একটি ক্যাম্পেইন শুরু করে। যার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে জুলাই মাসে ফেসবুকে বিজ্ঞাপনদাতাদের বিজ্ঞাপন না দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা।
সংস্থাগুলো বলছে যৌক্তিক কারনেই এই ক্যাম্পেইন শুরু করা হয়েছে। ফেসবুকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঘৃনামূলক বক্তব্য দেখা যায়। যা মোকাবেলায় ফেসবুকের কার্যক্রম যথেষ্ট নয় বলছে সংস্থাগুলো।
ক্যাম্পেইনের তালিকায় ১০০ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান এর নাম দেখা যায়। এসব প্রতিষ্ঠান এই প্রচারে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রয়েছে। এর মধ্যে কোকা-কোলা, ইউনিলিভার, ভেরিজন ইত্যাদি বড় নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ইন্টারনেট বিজ্ঞাপনের বাজারে ২০১৬ সালে আকারটি ছিল প্রায় ৫৭৪৯ বিলিয়ন টাকার। যেখানে ঐতিহ্যবাহী মিডিয়া আউটলেটগুলোর আকার ছিল প্রায় ১১৯৭৯ বিলিয়ন টাকার।
২০১৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনগুলো এর আকার প্রায় ১০৮৯০ বিলিয়ন টাকা ছাড়িয়ে গেছে। স্ট্যাটিস্টা বলছে এটি মোট মার্কিন বিজ্ঞাপন ব্যয়ের ৫৪.২ শতাংশ। অর্থাৎ মাত্র চার বছরের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে ডিজিটাল শিল্প।
ফেসবুক এর গত বছরের আয় ছিল প্রায় ৫৯৩৬ বিলিয়ন টাকা। এই আয় এর বেশিরভাগ এসেছে ফেসবুকে দেওয়া বিজ্ঞাপন থেকে। ই মার্কেটার বলছে ২০১৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন ব্যয় এর প্রায় ৬১ শতাংশ অর্জন করেছে গুগল এবং ফেসবুক।
ফেসবুকে বিজ্ঞাপন বর্জনের ক্যাম্পেইন ফেসবুকের বাজারমূল্য কমিয়ে দিয়েছে। প্রায় ৪২৪ বিলিয়ন টাকার বাজারমূল্য হারাতে পারে এই বর্জনের ফলে বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে।
এর ফলে ঐতিহ্যবাহী নিউজ ইন্ডাস্ট্রিগুলো লাভবান হতে পারে কিনা তা বোঝার জন্য এই ঘটনাটি সাবধানতার সাথে পর্যবেক্ষণ করা দরকার।
বিজ্ঞাপন বর্জনের ক্যাম্পেইনে ১০০ টিরও বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান সমর্থন জানিয়েছে। তবে এসব প্রতিষ্ঠান কি পরিমান অর্থ বিনিয়োগ করেছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফেসবুকে বিজ্ঞাপন অনেক ব্র্যান্ডের জন্য তাদের বিপণন বাজেটের একটি সামান্য ভগ্নাংশ।
ফেসবুকের আয়ের প্রায় ৭৬ শতাংশই ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে আসে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন বর্জনের ক্যাম্পেইনে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। এমনকি সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কেননা করোনাভাইরাস মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত তাদের ব্যবসাকে তারা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে উপরে উঠাতে চাইবে।
বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে ফেসবুক যে আপত্তিজনক হয়ে উঠতে শুরু করেছে তার ১ম ইঙ্গিত হতে পারে এই বিজ্ঞাপন বর্জন ক্যাম্পেইন। তবে যেহেতু শুধু মাত্র জুলাই মাসে বিজ্ঞাপন বর্জন করার কথা বলা হয়েছে তাই বিজ্ঞাপনদাতারা আগস্ট মাসে বিজ্ঞাপন শুরু করতে পারে বলে ধারনা করা যাচ্ছে।