গ্রাহককে হুমকি দিল ইভ্যালি!
ইভ্যালির নিজেদের তৈরি করা ৪৫ কর্মদিবসে ডেলিভারি করার কথা থাকলেও পেমেন্টের ৯০ দিন পরেও পাওয়া যায়নি অর্ডারক্রীত মাইক্রোওয়েভ ওভেনের ডেলিভারি। ইভ্যালির ক্রেতা মোঃপলাশ বিষয়টি নিয়ে ইভ্যালির অফিসিয়াল কাস্টমার সাপোর্ট অফিস ধানমণ্ডিতে স্ব-সরিলে যোগাযোগ করলে তাকে বলা হয় আগামি ১০-১৫ দিন পর পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দায়িত্তে থাকা প্রতিনিধিকে ভোক্তা অধিকারের শরনাপন্ন হওয়ার বিষয়টি জানালে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, “যেখানে ইচ্ছে কমপ্লেন করেন, যত জায়গায় পারেন”।
এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চাইলে পলাশ জানান, গত ১৮ মে ওয়ালটনের একটি মাইক্রোওয়েভ ওভেন অর্ডার করি। যার বাজারমূল্য ৬ হাজারের মত প্রায়, ইভ্যালিতে আমি সেটা পাই প্রায় পাঁচ হাজারে। তাছাড়া আমার ইভ্যালি গিফট কার্ড কেনা ছিল বলে খরচ অনেকটা বেচে যাবে বলেই অর্ডার করে দিলাম। ইভ্যালিতে এটিই আমার প্রথম অর্ডার ছিল। যেহেতু ইভ্যালির দাবি তারা নাম্বার ১ ই-কমার্স এবং আমাকে ৪৫ দিনের মধ্যেই ডেলিভারি দেওয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। তাই ভেবেছিলাম হয়তো জুনের মধ্যেই বা শেষের দিকে পাবো।
জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম, তারপর ইভ্যালির অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে জানালাম। তাঁতে কোন ফল না পেয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলাম তাদের সাপোর্ট সেন্টারের নাম্বারে কিন্তু তাদের অবস্থা এতোই করুন যে ৪ দিন চেষ্টা করেও কোন সারা পেলাম না। এদিকে ইভ্যালির ওয়ালটনের দায়িত্তে থাকা মিথুন নামের এক কর্মকর্তা এক একটা আশার বানি দিতে লাগলো আমার মত শত শত কাস্টমারকে, চিন্তা নেই ঈদের আগে ডেলিভারি পাবেন। কিন্তু কেউই মে-জুনের অর্ডার করা মাইক্রোওয়েভ পেল না। অর্ডার বাতিল করে টাকা ফেরত চাইলে বলা হয় আগামি কয়েকদিনেই পেয়ে যাবেন। এই বলে রিফান্ড রিকুয়েস্টও বাতিল করে দিল ইভ্যালি কর্তৃপক্ষ। এরপর ঈদ গেল, Evaly CEO মোঃ রাসেল ভাই লাইভে এসে বললেন আপনাদের যাদের ৬০ দিনের উপরে হয়েছে তারা সবাই ঈদ বোনাস পাবেন। যাতে পরিস্থিতি একটু শান্ত করা যায় এজন্যই এই মিথ্যে আশা দিয়েছেন। একটা পয়সাও আসেনি। উলটো গ্রসারি যে সকল প্রোডাক্ট ব্যাল্যান্স দিয়ে অর্ডার করা হয়েছে সেগুলো ৭২ ঘণ্টার বদলে ৭ দিন হতে চললো এখনও প্রসেসিং।
সর্বশেষ না পেরে ১৬ আগস্ট গেলাম তাদের ধানমন্ডি অফিসে, সেখানের কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধিকে ইনভয়েস নং #EVL137771550 জানানোর পর তিনি এমনভাবে বললেন , আরও ১০-১৫ দিন সময় লাগতে পারে, যেন ৯০ দিনের ভোগান্তি খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়! ভোক্তা অধিকারের বিষয়টি জানানোর কথা বলায় ইভ্যালি প্রতিনিধি ক্ষেপে গিয়ে বলেন, “যেখানে পারেন বলেন গিয়ে, যত জায়গায় পারেন“! কথা শুনে মনে হল, ভোক্তা অধিকার কাজ করে ইভ্যালির জন্য, ভোক্তার জন্য না। এতটাই কনফিডেণ্ট যে ভোক্তা অধিকার তাদের কথাই আমলে নিবে, ভোক্তার না।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ফেসবুকে তারা শুধুমাত্র ওয়ালটনের মার্চ-মে মাসের ৪০০-৬০০ মানুষের অর্ডার এখনও ডেলিভারি করেনি। ইনভয়েস নাম্বারসহ যার একটি লিস্টও টেকমাস্টারব্লগকে তিনি দিয়েছেন।
বিভিন্ন লোভনীয় অফারের নামে এরকম হাজারো গ্রাহককে প্রতিনিয়ত ভুগিয়ে যাচ্ছে ইভ্যালির মত কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। এতে করে ভোক্তারা অনলাইনে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে দিন দিন। যা ভবিষ্যতে ই-কমার্স থেকে বিমুখ করে দিবে লাখ লাখ গ্রাহককে। তাই ভোক্তার অধিকার রক্ষার্থে, কর্তৃপক্ষের উচিৎ বিষয়গুলো আমলে নিয়ে কঠোর আইনের আওতায় আনা।
বিঃদ্রঃ পলাশ আমি লেখক নিজে, নিউজের স্বার্থে তৃতীয়পক্ষ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।