কল্প-বিজ্ঞান

এক অপার্থিব জগতের বচন – হে ক্ষনিকে অতিথী পর্ব – এক

টেকমাস্টার ব্লগের যখন যাএা শুরু হবে তখন ভাবছিলাম ধারাবাহিকভাবে একটা সায়েন্স ফিকশান লিখব। অর্থ বিজ্ঞান।কিন্তু আমার এই সায়েন্স ফিকশানের বিজ্ঞান কতটা থাকবে সেটা দেখার বিষয়। লেখা শুরু করার আগে কত কিছু মনে হয় এটা থাকবে ওটা থাকবে। কিন্তু লেখার সময় যেন সব ভুল যাই 😀
আমরা যাই লিখি না কেন সব কিছুর মধ্যে যেন একটা নিজের জীবনের অভিজ্ঞার ছাপ থাকে। আমারটা মনে হয় সেই রকম কিছু হয়ে যায়। আবার যদি এমন হয় যে বিজ্ঞানের কল্পকাহিনী লিখতে গিয়ে কোন উপন্যাস হয়ে যায়:) আজ প্রথম অংশটুকু পড়লে সেই রকম কিছুই মনে হবে। দেখা যাক ধারাবাহিকতা রাখতে পারি কি না।
হে ক্ষনিকে অতিথী

আমি কি বেঁচে আছি না কি মরে গেছি সেটা বুঝতে আমার বেশকিছু সময় লাগল।  এখনো আমি বুঝতে পারছি না আসলে কি আমি বেঁচে আছি। সব অনুভূতি শুন্য মনে হচ্ছে। আচ্ছা চারপাশের পরিবেশটা এত শান্ত এবং কমল লাগছে কেন?
মনে হচ্ছে আমার চোখের আলোটা কমে গেছে। এই কমে যাওয়ার মানে কি? আমার তো চোখে চশমা ছিল। আচ্ছা আমার চশমাটা কই? আমি কিছুক্ষন আমার চশমাটা খুজতে থাকলাম। টেবিলের উপর তো থাকার কথা। আমি টেবিলটা ভাল করে খুজলাম । না টেবিলে নেই। আচ্ছা এখন দেখি তো বুজ শেলফ এ আছে কি না?
আস্তে আস্তে আমি বুক শেলফের কাছে গেলাম। বুক শেলফ এ কত পুরানো বই পড়ে আছে। অনেকদিন বইগুলো পড়া হয় না। শেলফের প্রতিটা তাক খুব ভাল করে দেখলাম কিন্তু চশমাটা পেলাম না। মাকে দেখতে পেলাম আমার সামনে দিয়ে হাতে  দুধের মগ নিয়ে আমার রুমের দিকে যাচ্ছে। আজব মা আমাকে দেখতে পেল না?? আমার সামনে দিয়েই তো গেল। আমি মায়ের পিছনে পিছনে আমার রুমে গেলাম। গিয়ে দেখি বিছানায় আমার মত অবিকল একটা দেখ আমার বিছানায় পড়ে আছে। দেখতে পরিপূর্ন আমার মত। আচ্ছা তাহলে বিছানায় দেখা মানুষটার কি আমারই দেহ। দেহটা নীথর পড়ে আছে। নড়াচড়া করছে না। মা দেহটার মাথা হাত বুলিয়ে দিয়ে কাথা দেহটার উপর দিয়ে রুম থেকে চলে গেল। মা যাওয়ার সময় আমি মায়ের সামনেই ছিলাম কিন্তু এবারও মা আমাকে দেখল না। আমার নীথর দেহ দেখে মা কি কিছু বুঝতে পারেনি। আচ্ছা আমি দেহ বিছানায় তাহলে আমি এখানে দাড়িয়ে আছি কেমন করে? এটা কি আত্না…….? তাহলে কি আমি সত্যি মারা গেছি!!!! প্রচন্ড জোরে চিৎকার দিতে ইচ্ছা করল এবং চিৎকার দেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু আমার মুখ থেকে কোন শব্দ আসল না। তাহলে সত্যি আমি মারা গেছি। শুনেছি মারা যাওয়ার পর নাকি মানুষের  আত্না নাকি ঘুরে বেড়ায়।  বিভিন্ন মুভিতে দেখছিলাম ব্যাপার গুলো। আচ্ছা কোন ছবিতে দেখছিলাম। মানুষের আত্নার ঘুরে বেড়ানো  দৃশ্য গুলো। সত্যি কি আমি মারা গেছি? আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না।  আমার  দেহটি নীথরই পড়ে রইল। মা ভেবেছে আমি ঘুমিয়ে আছি। আচ্ছা এখন সময় কয়টা বাজে ? আমি ঘড়ির দিতে তাকালাম। সময় রাত ১টা বাজে। এত রাত পযন্ত মা জেগে আছে।     আমার মা না কি? আমি যতক্ষন না পযন্ত ঘুমাব মা ঘুমাবে না। এখনো আমি মশারী আমার মা টানিয়ে দেয় এবং জুতার ফিতা বেধে দেয়। আমার কাছে পৃথীবির সবচেয়ে কঠিন কাজ মনে হয় মশারী নিজ হাতে টানানো এবং জুতার ফিতা বাধা। আমি অনেক চেষ্টা করেও এই দুইটা কাজ করতে পারেনি। আর কি অবাক মা একটুকু রাগ করে না। কখনো বলে না আজ আর না , এত বড় ছেলে এই সামান্য কাজটুকু করতে পারিস না ।  মাঝে যদিও বলে তারপরও নিজেই আবার এই দুইটা করে করে দিত।  আচ্ছা আমি মারা গেছি এটা যখন মা জানবে তখন কি করবে মা? কিভাবে নিজেকে সান্তনা দিবে না। এই দৃশ্যটি কি আমাকে দেখতে হবে?  মা কান্না মাখা চোখ দুটোর কথা চিন্তা করতেই আমার প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে। বুক ফেটে যাচ্ছে। কিছুক্ষন কাঁদলে কেমন হয়? আমি আগে অনেক কাঁদতাম। কেউ কিছু বললে অনেক কান্না পাইত। কিন্তু সবার সামনে কাঁদতে পারতাম না। তাই বাথরুমে দিয়ে পানি কল চালু করে কাঁদতাম । আর এটা মজার ব্যাপার তখন আবিষ্কার করে ফেলেছিলাম। কান্না করলে মনটা যেন একটা হালকা হয়ে যায়। যেন চোখের পানির সাথে যেন আমাদের সকল মান অভিমান চলে ধুয়ে চলে যায়।  একটা দিনের কথা খুব মনে পড়ে গেল।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।