উইন্ডোজ ১০ ‘ফল ক্রিয়েটরস আপডেট’ এ যা কিছু নতুন
উইন্ডোজ ১০ এর নতুন আপডেটেড ভার্সন এলো “ফল ক্রিয়েটরস আপডেট” নামে। এটি ‘উইন্ডোজ ১০ ভার্সন ১৭০৯’ নামে সংস্করণ করা হয়েছে। উইন্ডোজ ১০ এর এই নতুন ভার্সন সম্পূর্ন নতুন ভাবে ডিজাইনকৃত।
উইন্ডোজ ১০ স্লো সমস্যার সেরা ৭ সমাধান
এতে মাইক্রোসফট কর্টানা, এজ এবং ফটোজ এর উন্নয়নের জন্য অনেক নতুন ফিচারের সমাবেশ ঘটেছে। সেই সাথে যোগ হয়েছে নতুন ইমোজি এবং উইন্ডোজের বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা সহ আরও অনেক কিছু। আসুন জেনে নিই কী কী যোগ হল এই নতুন উইন্ডোজ ১০ আপডেটেড ভার্সনে
উইন্ডোজ ১০ এ ১০০% ডিস্ক/সিপিউ ইউজ সমস্যার সমাধান
।
১. ফ্লুয়েন্ট ডিজাইন সিস্টেম
এটি মূলত কোন ফিচার নয়; বরং উইন্ডোজ ডিজাইনের একটি কৌশল মাত্র। ‘ফল ক্রিয়েটরস আপডেট’ এর মাধ্যমে মাইক্রোসফট ‘উইন্ডোজ ১০’ এ নতুন ‘ফ্লুয়েন্ট ডিজাইন সিস্টেম’ চালু করেছে। তবে এই পরিবর্তনগুলো খুবই সূক্ষ্ণ। যেমন- মোশন এবং ব্লার ইফেক্টে পরিবর্তন, উইন্ডোজ ভিউ এ পরিবর্তন প্রভৃতি।
২. মিক্সড রিয়্যালিটি
‘ফল ক্রিয়েটরস আপডেট’ এ ব্যবহৃত হয়েছে মিক্সড রিয়্যালিটি। মিক্সড রিয়্যালিটির মাধ্যমে আপনি ডিজিটাল দুনিয়া এবং বাস্তব দুনিয়ার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবেন। এর জন্য দরকার হবে ‘মিক্সড রিয়েলিটি হেডসেট’। এসার, আসুস, ডেল, এইচপি প্রভৃতি কোম্পানি ‘ফল ক্রিয়েটরস আপডেট’ এর জন্য নতুন ‘মিক্সড রিয়েলিটি হেডসেট’ নিয়ে এসেছে। ‘মিক্সড রিয়েলিটি ভিউয়ারস এপ’ এর মাধ্যমে আপনি পিসি ক্যামেরা ব্যবহার করে কোন ত্রিমাত্রিক বস্তুকে বাস্তব দুনিয়ায় নাড়া-চাড়া করতে পারবেন। এই ত্রিমাত্রিক বস্তুগুলো হল মাইক্রোসফট নির্মিত বিশেষ ত্রিমাত্রিক কার্টুন চরিত্র। আপনি চাইলে নিজে নিজে এইসব কার্টুন ডিজাইন করতে পারবেন।
৩. ভিডিও রিমিক্স
যা পূর্বে ‘স্টোরি রিমিক্স’ নামে পরিচিত ছিল তা ‘ফল ক্রিয়েটরস আপডেট’এ ‘ভিডিও রিমিক্স’ নামে এসেছে। তবে নাম যা-ই হোক মূল কথা হল এই নতুন ফিচারের মাধ্যমে কতগুলো ছবি কিংবা ভিডিওর সমাবেশ ঘটিয়ে একটি নতুন ভিডিও তৈরি করতে পারবেন আপনি। তা নিজের ইচ্ছেমতো ডিজাইন করতে পারবেন এবং ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামে শেয়ার করতে পারবেন। ছবি এডিট করা, ভিডিও ক্লিপ সংযোজন করা, নতুন সব ফিল্টার যোগ করা, বার্তা এবং মিউজিক যোগ করা প্রভৃতি কাজ করতে পারবেন নিজে ইচ্ছেমতো । মাইক্রোসফট স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনাকে একটি ভিডিও তৈরি করে দিবে। আপনি চাইলে তাতে নিজের ইচ্ছেমতো পরিবর্তন আনতে পারেন।
৪. নতুন রুপে কর্টানা
ফল ক্রিয়েটরস আপডেট এ আপনি ‘কর্টানা’কে উইন্ডোজ শাট ডাউন করা, রিস্টার্ট করা, পিসিকে লক কিংবা সাইন আউট করার নির্দেশ দিতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে ‘মাইক্রোসফট এজ’ থেকে বেরিয়ে আসতে হবেনা। তাছাড়া ‘মাইক্রোসফট ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট’ এর মাধ্যম যেকোনো কিছু খুঁজে বের করা এখন আরও বেশি সহজ হয়েছে।
৫. ওয়ান ড্রাইভ ফাইলস অন ডিমান্ড
ফল ক্রিয়েটরস আপডেট এ আপনি ‘ওয়ান ড্রাইভে’ সংরক্ষিত ফাইলও দেখতে পাবেন ‘ফাইল এক্সপ্লোরারে’। সেই সাথে দেখতে পাবেন পিসিতে ডাউনলোডকৃত ফাইলগুলোও। ওয়ান ড্রাইভে সংরক্ষিত ফাইলগুলোর পাশে নীল রঙের দাগ এবং পিসিতে সংরক্ষিত ফাইলগুলোর পাশে সবুজ দাগ থাকে। ওয়ান ড্রাইভে সংরক্ষিত ফাইলগুলি ফাইল এক্সপ্লোরারে দেখা গেলেও তা কোন জায়গা দখল করেনা। আপনি চাইলে ওয়ান ড্রাইভ থেকে ফাইল ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারেন বাড়তি কোন ঝামেলা ছাড়াই।
৬. ইমোজি প্যানেলঃ
যেকোনো কথোপকথনে আপনি ব্যবহার করতে পারেন দারুণ সব ইমোজি। ইমোজি প্যানেলে অসংখ্য ইমোজি যোগ করা হয়েছে। ইমোজি প্যানেলে প্রবেশ করাও অনেক সহজ। কীবোর্ডে ‘উইন্ডোজ কী’তে চাপ দিয়ে ‘পিরিওড কী’তে চাপ দিলে ইমোজি প্যানেল চালু হবে। তারপর ব্যবহার করা যাবে যেকোনো ইমোজি।
৭. টাস্কবারে কন্টাক্ট সংযোজন
ফল ক্রিয়েটরস আপডেট ‘পিপল’ বাটন নামে টাস্কবারে নতুন বাটন যোগ করেছে। আপনি আপনার কন্টাক্ট লিস্টে যেই ৩জন ব্যক্তির সাথে সবচেয়ে বেশি যোগাযোগ করেন এই বাটনটি আপনাকে তাদের সাথে দ্রুত যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিবে।
৮. ভাইরাস প্রতিরোধ
উইন্ডোজ ১০ এ ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য নেয়া হয়েছে আরও অভিনব পদক্ষেপ। ‘Windows Defender Security Center’ এ যান। সেখান থেকে ‘Virus & threat protection > Virus & threat protection settings’ এ যান। এখানে একটি নতুন অপশন পাবেন ‘Controlled folder access’ নামে। এটি আপানার পিসিকে বিভিন্ন র্যান্সামওয়্যার থেকে সুরক্ষা দিবে। এখানে আগে থেকেই ডেস্কটপ, ডকুমেন্ট, মিউজিক, পিকচার ও ভিডিও ফোল্ডার যোগ করা থাকে। আপনি চাইলে অন্যান্য ফাইলও যোগ করে নিতে পারেন।
৯. পিসিতে ফোন সংযোগ
উইন্ডোজ ফোন ছাড়াও মাইক্রোসফট এখন অ্যান্ড্রয়েড এবং আইফোনের সাথেও যোগাযোগের মাধ্যম সৃষ্টি করে দিয়েছে। পিসির ‘Settings’ অপশনে ‘Phone’ নামক একটি সেকশন আছে। যা আপনার ফোন এবং পিসির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করবে। এই যোগাযোগের সুবিধা হল এই যে, আপনি যদি পিসিতে কোন অর্ধ-সমাপ্ত কাজ ফেলে রাখেন তা ফোনের মাধ্যমে ওই জায়গা থেকেই শুরু করতে পারবেন।
উইন্ডোজ ৮ এর অটোম্যাটিক আপডেট পিসিকে স্লো করে দেয়। তাই বিরক্ত লাগে।